নিখোঁজ প্রবীর ঘোষের মেয়ে কাঁদলেন, কাঁদালেন



মানববন্ধনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে নিখোঁজ স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষের বড় মেয়ে দিয়া ঘোষ— সমকাল
'১৭ দিন ধরে বাবা আমাদের সঙ্গে নেই। কোথায় আছে, কীভাবে আছে জানি না। বেঁচে আছে, না তাকে মেরে ফেলা হয়েছে, তাও নিশ্চিত করতে পারছে না পুলিশ। এখন আমাদের প্রতিটি রাত কাটে নির্ঘুম আর দুঃসংবাদ শোনার অপেক্ষা নিয়ে।'
নিখোঁজ নারায়ণগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষের বড় মেয়ে দিয়া ঘোষ এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবার সন্ধান দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেয়। মা ও বড় বোনকে কাঁদতে দেখে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করে ছোট্ট ঐশী ঘোষ। তিনজনের কান্নায় মানববন্ধনে উপস্থিত কেউই তাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।
নিখোঁজ স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষের সন্ধান দাবিতে বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করে জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও স্বর্ণশিল্পী সমিতি। সেখানে নিখোঁজ প্রবীর ঘোষের বাবা ভোলানাথ ঘোষ, স্ত্রী রূপা ঘোষ, বড় মেয়ে দিয়া ঘোষ ও ছোট মেয়ে ঐশী ঘোষ ছাড়াও পরিবারের অন্যান্য সদস্য, স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
গত ১৮ জুন রাতে বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে প্রবীর ঘোষ নিখোঁজ রয়েছেন। পরদিন ভোলানাথ ঘোষ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে ২১ জুন জিডিটি মামলা হিসেবে নেয় পুলিশ।
মানববন্ধনে প্রবীর ঘোষের স্ত্রী রূপা ঘোষ বলেন, 'গত ১৭ দিনেও পুলিশ আমার স্বামীর কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। তার কী হয়েছে, কোথায় আছে কোনো হদিসই পুলিশ করতে পারেনি। দুই মেয়ে নিয়ে আমার দুশ্চিন্তায় রাত কাটে। আমি স্বামীর সন্ধান চাই। যদি তাকে মেরে ফেলা হয়ে থাকে, তাহলে অন্তত লাশটা চাই।'
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা, কালীরবাজার স্বর্ণশিল্পী শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ জুয়েলারি সমিতি, নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন। 
মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন এসব সংগঠনের নেতারা।
ওই সময় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি কমান্ডার গোপীনাথ দাসের এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'মামলা হওয়ার পর থেকে আমাদের কর্মকর্তারা যেখানে সূত্র পেয়েছে, অভিযান পরিচালনা করে আসছেন, এখনও করছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি নেই।'
মামলাটি মঙ্গলবার ডিবিতে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন,  ডিবি ও পুলিশ সম্মিলিতভাবে মামলার তদন্ত করবে।
 নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

Post a Comment

0 Comments